সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১২

বিচ্ছিন্ন যাতনার বহিঃপ্রকাশ


আমি কষ্ট একদম সহ্য করতে পারি না। আমার যেটা ভালো লাগে না, আমি যেটা চাই না সেটাই আগে হয়। কারো চোখের পানি দেখলেই আমারও চোখে পানি চলে আসে। কারণে অকারণে নিজেই কেঁদে ফেলি। কষ্ট গুলো কেনও এমন!! কষ্ট গুলো কেনও কষ্ট দেয়। ইদানিং মনে হচ্ছে, আমি কষ্টের বেড়াজালে আটকা পড়েছি। মনে হয় আমার সব কিছু ঘিরেই কষ্ট! যেনও কষ্টকে ঘিরেই আমি। আবার মনে হয়, আমার সব কিছু ঘিরেই কষ্টরা! কোন কিছুতেই মন বসাতে পারছি না। কোন কারণ ছাড়াই কিছু ভালো লাগে না। লাইফের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে সত্যি নিজের প্রতি নিজের করুণা হয়। এভাবে সময়গুলো কাটাতে হবে কখনো চিন্তাই করিনি। আগের কথাগুলো মনে হলে আরও বেশী কষ্ট লাগে। নিজেই নিজের কাছে সান্ত্বনা খুঁজে বেড়াই। কিন্তু সে সান্ত্বনা চোখের জল ফেলেই শেষ হয়।


কাউকে ভালো লাগা কি কারো প্রতি ভালোবাসা? এটা কি এক ধরনের দুর্বলতা? আমি বুঝতে পারিনা!! আমার কাউকে ভালো লাগে বলেই আমি তার সাথে কথা বলার, গল্প বলার চেষ্টা করি। কিন্তু তার যদি আমাকে ভালো না লাগে তখন আমার কি করার আছে? আমাকেও হয়ত আস্তে আস্তে তার কাছ থেকে সরে যেতে হবে। জোর করে তো আর কাউকে ভালো লাগানো যাবে না! এটা অন্তত আমার দ্বারা সম্ভব না। আমি প্রিয় মানুষদের সান্নিধ্য খুব পছন্দ করি। কিন্তু যখন তাদেরই কেউ আমাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তখন খুব কষ্ট হয়। আমি কেনও শুধু তাকে ডিস্টার্ব করছি!! কিন্তু আবার ডিস্টার্ব না করেও পারি না। তখন একধরনের চাপা কষ্টের সৃষ্টি হয় মনের কোণে। মনে মনে চিন্তা করি আর ফোন দিবো না, আর কথা বলবো না!! কিন্তু আমি পারি না। চেষ্টা করি তার কাছ থেকে দূরে থাকার। সে যেনও আমার কারণে বিরক্তি না হয়। এভাবেই এক সময় সরিয়ে নিই নিজেকে!!

ইদানিং সময়গুলো খুব খারাপ যাচ্ছে। বাসা থেকে একদম বের হওয়া যাচ্ছে না। সময় যেনও পার হতেই চায় না। কতক্ষণ বই পড়ি, কতক্ষণ ব্লগ পড়ি, কতক্ষণ ফেবু দেখি। আবার মাঝে মাঝে বিদ্যুতের খেলা উপভোগ করি। আবার মাঝে মাঝে আমার পুরাতন লিখাগুলো পড়ি। এভাবেই কেটে যাচ্ছে অবসর সময়গুলো। আর ভালো লাগছে না এভাবে!!! আবার কতক্ষণ গান শুনছি। গানের কথাগুলো দেখা যায় আমার সাথে, আমার জীবনের গতির সাথে কেমন যেনও মিলে যায়। তাই গান শুনেও মাঝে মাঝে আমি কাঁদি। আমার নিজের অবস্থানের কথা চিন্তা করে মাঝে মাঝে আমি নিজেই হেসে উঠি। সেদিন একটা নাটক দেখেছিলাম টিভিতে। নাটকের নাম ‘শেষ কথাটি’। শেষ পরিণতি দেখে খুব কষ্ট পেলাম। ভালোবাসা এমন এক জিনিস, যেটা মানুষকে কখনো হাসায় কখনো কাঁদায়। ভালোবাসাতে প্রাণের স্পন্দন না থাকলে ভালোবাসা পানসে হয়ে যায়। এক সময় ধীরে ধীরে এই ভালোবাসা হারিয়ে যেতে থাকে।



ভেবেছি এখন আর নিজেকে নিয়ে ভাববো না। দেখি এভাবে কত দূর এগুনো যায়, কতটুকু কষ্ট সহ্য করা যায়। কষ্টের পরিমাণ কত বেশী হলে আমি তার মাঝে ডুবে যেতে পারবো, আমি সেটা দেখতে চাই। সায়ানের একটা গান খুব মনে পড়ছে,

ওরে আমার চোখের জল

বল আমায় এবার বল
শিখিয়ে দেনা আমায় এবার
যে কোন কৌশল

তোরে কোথায় লুকাই
কোথায় লুকাই
আমায় এবার বল

তুই বুকেই যদি গড়লি বসত
বুকেই রয়ে যা
জমে জমে আমার বুকের
বাড়িয়ে যা বোঝা
তুই নদী হয়ে যা
      
থেকে থেকে দুচোখ ভেঙ্গে
জোয়ার কেন আসে
আমার সাধের গড়া পাষান ভেঙ্গে
তোর বুকেতে ভাসে

ওরে আমার চোখের জল
চল ভাটির টানেই চল
যেই ক্ষ্যাপার ঝড়ে
আসলো জোয়ার
থামতে তারে বল

তোরে কোথায় লুকাই
কোথায় লুকাই
বলে দিতে বল 

তোরে যে পাঠালো আমার বুকে
তার কাছে শুধা
এ বুক ভরে দিলোই যদি
এক নদী ব্যথা
যা তার কাছে শুধা

আমি ফুরিয়ে যেতে চাই না দিতে
তার সে নদীর জল
তবু উপচে পড়ে ধুলায় লুটায়
আমার সে সম্বল

ওরে আমার চোখের জল
বল তারে গিয়ে বল
তার সাধের নদী রয় না বুকে
বড়ই সে চঞ্চল
তারে কেমন করে বাঁধন দেবো
বলে দিতে বল

**সায়ান**

লিখালেখির অভ্যাস আমার একদম নেই। আমি লিখতে পারি না মোটেও। তারপরেও নিজের মনের কথাগুলো, হৃদয়ের আবেগগুলো, অনুভূতিগুলো অক্ষরে একটু সাজাতে চেষ্টা করি স্মৃতির। অব্যক্ত যন্ত্রণা, মৌন অভিমান, হাসি-কান্না, প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে কথামালা গাথি। কতটা হয় কে জানে। আর না হলেও আমার তো কোন সমস্যা নেই। কারণ, আমি শুধু আমার জন্যই লিখি। আমি তো অন্যদের জন্য লিখছি না। কারো হয়ত সেটা খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু এতে আমার কিছুই করার নেই! সেজন্য আমি দুঃখিত।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন