![]() |
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ আমাদের মাঝে আর নেই। বিষয়টা
চিন্তা করতেই কেমন জানি লাগে! যে কোন মৃত্যু সংবাদ আমি সহজভাবে নিতে পারি না। যখনই
নিজেকে ঐ মৃত মানুষটার জায়গায় চিন্তা করি তাহলে খুব অসহায় লাগে!! সব মানুষ মারা
গেলেই একটা নিউজ হয়। কারো জন্য আহাজারি কম হয়, কারো জন্য বেশী- তফাৎ এটাই!
আমি হুমায়ূন আহমেদকে আগে এতোটা পছন্দ করতাম না কিন্তু তাঁর লিখা আমার
ভালো লাগত না। কিন্তু যখনই তাঁর মৃত্যু সংবাদ শুনলাম তখন আমার বুকের ভেতর কেমন
জানি করে উঠল! তাঁর প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক বেড়ে গেলো!! আমি বুঝতেই পারছিলাম না,
এটা কেনও হল! আমি হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কিছু একটা লিখবো ভাবতেছিলাম। কিন্তু মন
স্থির করে বসতে পারছিলাম না! যখন লিখেত বসলাম বার বার চোখের কোণে পানি চলে আসছে!
ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে!
হুমায়ুন
আহমেদ মানুষের আবেগ খুব ভাল করে বুঝতে পারতেন। মানুষকে খুব সহজেই হাসাতে পারতেন,
কাঁদাতে
পারতেন। আমরা খুব সহজেই তার চরিত্রগুলোকে ভালবেসে ফেলেছিলাম। অনেক সময় তাঁর চরিত্র
গুলোর মাঝে নিজেকে খুঁজে বেড়াতাম! কিন্তু......!
ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয় –
চান্নি
পসর চান্নি পসর
আহারে
আলো
কে
বেসেছে কে বেসেছে
তাহারে
ভালো
কে
দিয়েছে নিশি রাইতে দুধের চাদর গায়ে
কে
খেলেছে চন্দ্র খেলা
ধবল
ছায়ায় –
এখন
খেলা থেমে গেছে
মুছে
গেছে রঙ
অনেক
দূরে বাজছে ঘন্টা ঢং ঢং
এখন
যাবো অচিন দেশে
অচিন
কোন গাঁয়ে
চন্দ্র
কারিগরের কাছে
ধবল পংখী
নায়ে
ও
কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়
চান্নি
পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয় –
অসাধারণ
কথার এই গানটি লিখেছেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। এমন হাজারো সৃষ্টি
যিনি উপহার দিয়েছেন সেই মানুষটি এখন আর নেই। এমন জায়গায় চলে গেছেন,
যেখান
থেকে মানুষ আর ফিরে আসে না। কি নির্মম বাস্তবতা! চাঁদনি রাতে মরণ চেয়েও তা তিনি
পাননি। দয়াময় কারিগর তার অনেক ইচ্ছে পূরণ করলেও এই ইচ্ছেটা পূরণ করেননি! তিনি ঘোর আমাবস্যার গহীন আধারে আমাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিয়ে চলে গেছেন
অচিন দেশে!
জীবনের শেষ দিকে কিছু লোক তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে খুব বেশি টানাটানি
করেছে। তারচেয়ে বেশী করছে সে মারা যাবার পর! একজন মানুষের ব্যক্তিগত জীবন যে তাঁর
নিজস্ব একটা বিষয়, সেই বোধটা আমাদের অনেক লোকের মধ্যেই খুব একটা
বেশি নেই। মানুষের ব্যক্তিগত জীবন একান্তই তাঁর নিজস্ব! আমরা এই জিনিসটা বুঝতেই
চেষ্টা করি না। আমরা আমাদের নৈতিকতার স্ট্যান্ডার্ডকে দাঁড় করিয়ে দেই একজন সফল
মানুষের সামনে। তারপর সেই মাণদণ্ড দিয়ে বিচার করতে চাই অন্যের জীবনকে। এটা কতটুকু
ঠিক, তা আমার বোধগম্য নয়!
![]() |
সংক্ষিপ্ত জীবনী- হুমায়ূন আহমেদ
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন