শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০

Online Home Schooling | Brave Men Campaign | সাহসীদের খেরোখাতা | COVID-19


বেশ অনেকদিন হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছেলেমেয়েরা বাড়িতেই আছে। কিন্তু কী নিয়ে সময় কাটাবে তা নিয়ে ওরা দিশেহারা। তাদেরকে ব্যস্ত রাখতে আর একই সাথে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে অনলাইন ভিত্তিক হোম স্কুলিং পদ্ধতিটি দারুণ এক মাধ্যম। কিন্তু এই হোম স্কুলিং এর পরিধী কত বড় হতে পারে? সন্তানের মেধাবিকাশের পাশাপাশি মানসিক ও নৈতিক বিকাশ নিশ্চিত করতেও কী অনলাইন ভিত্তিক কোনো মাধ্যম সহায়ক হতে পারে?

অস্থির একটা সময় পার করছি আমরা। অসংখ্য মানুষের মানবাধিকার আজ প্রশ্নবিদ্ধ; বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা; প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রূপে ঘটছে সহিংসতা। আমাদের সন্তানেরা- যাদের আমরা সব থেকে বেশি ভালোবাসি, যাদেরকে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকার সব স্বপ্ন, সব সংগ্রাম তারাই তো সহিংসতার স্বীকার হচ্ছে কিংবা তারাই হয়তো সহিংস হয়ে পড়ছে। নিঃসন্দেহে আমরা চাইব ওরা মেধাবী হবে, জ্ঞান গরিমায় উজ্জ্বল হবে। কিন্তু সবার আগে আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা মানবিক হয়ে বেড়ে উঠুক।ওদের মন-মনন, নৈতিকতা, সুষ্ঠ বিকাশ হউক, ওদের প্রজন্মটা এগিয়ে যাক সহিংসতাহীন এক পৃথিবীর দিকে।
তাই আমাদের এবারের প্রয়াস- অনলাইন ভিত্তিক এমন এক ডায়েরি আপনার সন্তানের কাছে পৌঁছে দেওয়া, যা হবে ওদের অবসরের সঙ্গী, গল্পে গল্পে ওরা খুঁজে বের করবে আমাদের পরিবারের, সমাজের অসংলগ্নতাগুলো আর ওর কাজের মধ্য দিয়ে সেগুলো পাল্টে দিবে একটু একটু করে।
বলছিলাম সাহসীদের খেরোখাতার কথা আমরা ব্রেভম্যান ক্যাম্পেইন নামে একটি স্কুল চালিয়ে আসছি ২০১২ সাল থেকে, তারই মূল হাতিয়ার ছিল এই ডায়েরি। এই পর্যন্ত প্রায় ১২৪টি স্কুলের সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী এই ডায়েরি টি গ্রহণ করেছে। শিক্ষকের সহয়তা থাকলেও ডায়েরি টি পূরণ করে তারা নিজেরাই। ডায়েরিতে তারা নিজের কথা লিখে, কী তাদের পছন্দ - অপছন্দ এভাবে এগোতে এগোতে তারা চোখ বুলায় নিজের পরিবারের দিকে, পরিবারের সবার কার কী পছন্দ? কে কোন কাজটা করে? আচ্ছা বাড়ির সব কাজগুলো একা মা এর উপর এসে পড়ছে না তো? আমিই কি কখনো কখনো মা এর কাজ বাড়িয়ে দিচ্ছি না তো? আবার দেখি খাবার টেবিলে মা কখনই আমাদের সাথে খান না, যেটুকু খাবার বাঁচে তা উনি একা একা খেয়ে নেন সবার আড়ালে, কোনো ভাবেই কী মায়ের জীবনে সহজ ও সুন্দর করা যায় না?
যেই ভাবা সেই কাজ- এখন থেকে ঘরের কাজে সবাই মিলে অংশ নিবো, মাকে সঙ্গে নিয়ে খাবো আর সেই আনন্দের মুহূর্তের ছবিগুলো দিয়ে সাজাবো এই ডায়েরি। একজন স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী খুব সহজেই পরিবারের এই ছোটো ছোট পরিবর্তনগুলো নিয়ে আসে। কিন্তু যে জেন্ডার সমতার কথা আমরা বলি তার বিচারে এই ছোটো কাজগুলোর গুরত্ব অগণিত। এভাবেই সে শিক্ষার্থী জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। পরিবারের পর নিজের বন্ধু বন্ধুবান্ধবকে সাথে নিয়ে সমাজের জন্য কাজ করে।
ডায়েরি পূরণের এক ফাঁকে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার এবং পুষ্টি নিয়েও জানা হয়ে যায় তার। সব মিলিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটায় পরিবর্তনের সাহসী যোদ্ধা হয়ে।
দুই একজন সাহসীর কথা না বললেই নয়; যেমনঃ কক্সবাজারের খুরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এর অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মেয়ে সহপাঠীদের যৌন হয়রানিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে স্কুলের শিক্ষকদের ও স্থানীয় লোকদের নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে বখাটেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপর থেকে মেয়েগুলো নিরাপদে চলাচল করে স্কুলে যাওয়া আসা করতে পারে।
জলদি আসছি আপনার সন্তানের সাহসীদের খেরোখাতা নিয়ে। ডায়েরির প্রতিটি সেশনের লিংক পেতে যোগাযোগ করুন ইনবক্সে অথবা আমাদের পেইজে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন