বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১২

সাধের পান-!!


আগেকার দিনে রাজা-বাদশাহরা শাহী পান খেতেন বলে জনশ্রুতি আছে। নানা গল্পগাথায় রাজ-রাজরাদের পানবিলাসের এন্তার বর্ণনা মেলে। সেসব পান সাজানো হতো দুর্লভ সব মসলা দিয়ে। মেশানো হতো বহুমূল্য সুগন্ধি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মোরব্বা, খেজুর, খোরমা, তানশিন, তেরেঙ্গা, চমন বাহার, এলাচ, গুন্তি, তবক, ইমাম, শ্রীকান্ত, নারিকেল, কিসমিস, সেমাই, স্লাচ, ঝুড়া ইত্যাদি

বর্তমানে শাহী খিলিপানে যেসব মসলা মেশানো হয় সেগুলো হচ্ছে- তানশিন, তেরেঙ্গা, চবন বাহার, এলাচ, গুন্তি, তবক, ইমাম, শ্রীকান্ত, নারিকেল, কিসমিস, সেমাই, স্লাচ, ঝুড়া, মিক্সার, মোরব্বা, খেজুর, খোরমা,  সেমাই, এলাচ, দারচিনি, লং, গোলমরিচ, পিপারমেন্ট, লাউ। এছাড়া এমন অনেক মসলাই আছে, যেগুলোর নাম তাদেরও জানা নেই। কেবল পানে মসলার আইটেম ও স্বাদ বাড়ানোর জন্যই দেন তারা।


পান-সুপারী আর নানান মশলা দিয়ে তৈরি একখিলি পান খেতে উৎসুক মানুষের দল শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই রয়েছে। এরমধ্যে ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, দক্ষিণ চীন, তাইওয়ারন, ফিলিপাইন, পশ্চিম ভঅরতীয় দ্বীপপুঞ্জ, আফ্রিকার কিছু দেশ উল্লেখযোগ্য। তাইওয়ানে তরুণীরা রাস্তার ধারে ধারে ছোট্ট পান দোকান নিয়ে বসেন যা সেখানের এক পরিচিত দৃশ্য। পান সুন্দরী (তাইওয়ানি ভাষায় বিংলাং ঝি সি অর্থাৎ বেটেল নাট গার্ল বা বেটেল বিউটি) তাইওয়ানি সংস্তৃতির অতি পরিচিত অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। পান সুন্দরীদের নিয়ে সেদেশে রচিত হয়েছে নাটক, নভেল, বানানো হয়েছে সিনেমাও। তবে পান-সিগারেট ও পানীয় বিক্রেতা এসব তরুণীদের সংক্ষিপ্ত পোশাক-আশাক নিয়ে তাইওয়ানি সমাজে বিতর্কও আছে। 

অভিজাত পানের দোকান পান সুপারী
২০০৩ সালে ধানমন্ডির মমতাজ প্লাজায় পান সুপারীর প্রথম দোকানটি যাত্রা শুরু করে। এরপর গুলশান, বসুন্ধরা সিটি, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বনানীতে শাখা খোলেন। গুলশানের শাখাটি বন্ধ করে এখন বনানীতে শাখা করা হয়েছে।

পান নিয়ে চিকিৎসকদের অভিমত
সপারী চিবুনো মানুষের প্রাচীনতম অভ্যাসগুলোর একটি। খ্রীস্টিয় প্রথম শতাব্দীতে সংস্কৃতে লিখিত চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়ক লেখালেখিতে বলা হয়েছে- সুপারীতে ১৩টি ভেষজ গুণ রয়েছে। এগুলো হলো- সুগন্ধি, ঝাঁঝ, তেঁতো, নোনতা, মিষ্টতা প্রভৃতি। এছাড়া আছে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার গুণও।    


অপরদিকে, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে খিলিপান উপকারী কোনও খাদ্যবস্তু নয়। নেহায়েত আয়েশ আর বিলাসিতায় পড়ে পান চিবায় মানুষ। তবে শুধুই পানের পাতা চিবুলে ওষধিগুণ পাওয়া যায়।

তবে নিয়মিত পান খাওয়া নিয়ে বিপদসঙ্কেতের ইঙ্গিত দিয়েছেন ডাক্তাররা। তারা বলেছেন, বাহারি মসলায় রসে টস টস পান খেয়ে ক্যান্সারকে নিজের শরীরে ডেকে আনা ছাড়া এটা আর কিছু না। মেডিকেল সায়েন্স কখনোই পান খাওয়ার স্বীকৃতি দেয়নি। পানে ব্যবহৃত সুপারিতে উত্তেজক উপাদান থাকে। ফলে পান খাওয়ার পর দেহে উত্তেজনার অনুভূতি জাগে। এ কারণে অনেক সময় অ্যাজমা বেড়ে যাওয়া, হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, ট্যাকিকার্ডিয়া বা নাড়ির স্পন্দন বেড়ে গিয়ে অস্থিরতা অনুভূত হতে পারে।
ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ক্যান্সার স্পেশালিস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক কনসালট্যান্ট ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন বলেন, প্রত্যেক পানেই সুপারি এবং চুন মেশানো হয়। আর মুখাভ্যন্তরের ক্যান্সারের জন্য প্রধান দায়ী উপাদান হচ্ছে চুন-সুপারি। এর সঙ্গে জর্দা-তামাক তো আছেই। এসবের বিক্রিয়ার কারণে মুখের অভ্যন্তরে এবং খাদ্যনালি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তা ছাড়া পানে অধিক লালের জন্য ব্যবহৃত খয়ের এসট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে মুখের আবরণীকে সংকুচিত করে।



তথ্য সুত্রঃ বাংলানিউজ২৪.কম
সেখান থেকে কাট সাট করে উপস্থাপন করলাম।
শুভেচ্ছা সবাইকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন