বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১১

সত্ত্বার দ্রোহিনী


কঙ্কন বিদ্রোহিনী, ওগো আত্মার দ্রোহিনী!
সহস্র আশা আর বিস্তৃত ভালোবাসা
বুকে জড়িয়ে বিশ্বাসের আদর মেখেছিলাম প্রেয়সিনী
তুমি সেই বিশ্বাসের প্রাচীর ভঙ্গকারিনী!!

ধিক্কার তোমায় ধিক্কার!
কি আছে আর অধিকার-
তোমায় ফের জড়িয়ে নেবার?

বিশ্বাস সেতো পবিত্র এক স্বত্তিয় অনুভূতি,
ভাঙবেনা ভাঙবেনা – গেয়েছিলাম তোমার স্তুতি
সত্য-মিথ্যার ভেদাভেদ ভুলে কতশত মাতামাতি
ছি! আজ সব পাল্টে গেলো রাতারাতি!!

সময়ে সময়ে অসময় মেনে না নিয়ে
দু’জনে চড়ে বেড়িয়েছি জগৎ বিঁভুয়ে,
আজ শুধু কষ্টের মিলনমেলা,
বিশ্বাস ভেঙ্গে চুরে একাকার-হায়রে ছেলে খেলা!!

মনে মনে আঁকিবুঁকি, তোমায় নিয়ে আশা
ছলকে ছলকে উঠে আজ নিঃস্ব ভালোবাসা!
পাল্টে পাল্টে নিয়েছ তুমি পুরানো বেশভূসা
আমায় নিয়ে ভাবনা কর কি তুমি, একটুখানি তৃষা?

উন্নাসিক তুমি, তুমি পরম ছলনাময়ী
শেষবধি হয়েছ তুমি মোর আত্মাক্ষয়ী
সমাপ্তি তাই সমাপ্তি টানছি, নিস্তার হল তোমার!
মুক্তি দিলাম তোমায় আজ, দিলাম কৃপা বিধাতার!

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১১

বিজয়ের কথা


শীতের এই রাতে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ডিসেম্বর মাস মহান বিজয়ের মাস। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেই স্বাধীনতা সংগ্রামে৩০ লাখ বীর শহীদ এবং ২লাখ মা-বোনকে যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বপ্নের স্বাধীনতা। সহমর্মিতা জানাচ্ছি শহীদ পরিবারের সদস্য এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যখন বিজয়ের কথা বলি- তখন প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ আসে, আসে ত্যাগ-তিতিক্ষার কথাও। কারণ বিজয় আপনাতেই আসে না, অর্জন করতে হয়। যে বিজয় যত বড়, তার অর্জনও তত কষ্টসাধ্য।

ই যে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় দিবস পালন করি। কিন্তু এই বিজয় দিবস কি শুধু আনন্দের দিন? এই বিজয় দিবসের সাথে জড়িয়ে আছে জাতির স্বপ্ন, জড়িয়ে আছে কোটি কোটি মানুষের আশা-আকাংখা আমাদের যে বিজয় দিবস তা যেমন মানুষের আশা-আকাংখার বিষয় ছিল, তেমনি ছিল জাতির স্বপ্নের বিষয়ও। পাকিস্তান আমলে আমরা ছিলাম পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিক। স্বাধীন দেশের নাগরিক হলেও আমরা তখন স্বাধীনভাবে বিকশিত হতে পারিনি, এর কারণ শাসকদের ভুল সিদ্ধান্ত ও অন্যায় আচরণ।

মায়ের লাগিয়া....!!


ভালোবাসি তারে, যে যতন করে
তুমি নির্ভরতা, তুমি মমতা, তুমি-ই ‘মা’

দূর গাঁয়ে ফেলে আসা মায়ের মুখ। মায়ের স্নেহ ছায়ায় বেড়ে উঠার সুখ, মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকার বেদনা কিংবা আকাশের ওপারে আকাশ, বাতাসের ওপারে বাতাস পেরিয়ে দূরে পাড়ি জমানো মায়ের স্মৃতি। এসবই কি আমায় পোড়ায় প্রতিনিয়ত! হু হু করে উঠে বুকের ভেতরটা......:(

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১১

ভোরের শিশির



শুভ্রস্নাত শীতের সকাল। ঘাসের ডগায় কয়েক ফোঁটা শীতের শিশির মনে করিয়ে দেয় 'জীবন সে তো পদ্মপাতার শিশির বিন্দু'। দিন শেষে শিশিরের শব্দের মতো যেমন সন্ধ্যা আসে, মুছে যায় পাখির ডানায় রৌদ্রের গন্ধ, তেমনি শীত নেমেছে জনপদে। হেমন্তের অলস সূর্যটা আরও কিছুটা হেলে পড়েছে দক্ষিণ আকাশে। রোদের তাপে নেই সেই রাগী উত্তাপের ছোঁয়া। হিম হিম ঠাণ্ডা আমেজ জড়িয়ে থাকে সকাল অবধি। এখন রাতের কালো আকাশ চিরে নিঃশব্দে নেমে আসে কুয়াশার চাদর। ভিজিয়ে দেয় গাছপালা, রাস্তার মানুষ, অলিগলি। ভোরবেলাতে খিড়কি খুলেই কনকনে হিম ভেজা বাতাসের ধাক্কা চোখে মুখে। কুয়াশা মোড়ানো চরাচর যেন ঘষা কাচের ওপারের দৃশ্যাবলি। অস্বচ্ছ, অপার্থিব। অস্পষ্ট বৃক্ষরাজি, খালবিলের জল, পূর্ব আকাশে উঁকি দেওয়া সূর্যটাও আড়াল। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন 'শুয়েছে ভোরের রোদ ধানের উপরে মাথা পেতে, মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার, চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ'। আমন ধানের সোঁদা গন্ধে ভরে ওঠে আবহমান বাংলার হেমন্ত সন্ধ্যা। সেই সন্ধ্যায়-রাতে টুপটাপ করে ঝরে পড়ে নিশির শিশির। নারিকেলের চিরল পাতার শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়ে হেমন্তের ক্লান্তি।