মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১১

ভোরের শিশির



শুভ্রস্নাত শীতের সকাল। ঘাসের ডগায় কয়েক ফোঁটা শীতের শিশির মনে করিয়ে দেয় 'জীবন সে তো পদ্মপাতার শিশির বিন্দু'। দিন শেষে শিশিরের শব্দের মতো যেমন সন্ধ্যা আসে, মুছে যায় পাখির ডানায় রৌদ্রের গন্ধ, তেমনি শীত নেমেছে জনপদে। হেমন্তের অলস সূর্যটা আরও কিছুটা হেলে পড়েছে দক্ষিণ আকাশে। রোদের তাপে নেই সেই রাগী উত্তাপের ছোঁয়া। হিম হিম ঠাণ্ডা আমেজ জড়িয়ে থাকে সকাল অবধি। এখন রাতের কালো আকাশ চিরে নিঃশব্দে নেমে আসে কুয়াশার চাদর। ভিজিয়ে দেয় গাছপালা, রাস্তার মানুষ, অলিগলি। ভোরবেলাতে খিড়কি খুলেই কনকনে হিম ভেজা বাতাসের ধাক্কা চোখে মুখে। কুয়াশা মোড়ানো চরাচর যেন ঘষা কাচের ওপারের দৃশ্যাবলি। অস্বচ্ছ, অপার্থিব। অস্পষ্ট বৃক্ষরাজি, খালবিলের জল, পূর্ব আকাশে উঁকি দেওয়া সূর্যটাও আড়াল। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন 'শুয়েছে ভোরের রোদ ধানের উপরে মাথা পেতে, মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার, চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ'। আমন ধানের সোঁদা গন্ধে ভরে ওঠে আবহমান বাংলার হেমন্ত সন্ধ্যা। সেই সন্ধ্যায়-রাতে টুপটাপ করে ঝরে পড়ে নিশির শিশির। নারিকেলের চিরল পাতার শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়ে হেমন্তের ক্লান্তি।




বহুদিন ধরে, বহু ক্রোশ দূরে, বহু ব্যায় করি, বহু দেশ ঘুরে, দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হইতে শুধু দু'পা ফেলিয়া, একটা ধানের শীষের উপর, একটি শিশির বিন্দু! (রবি ঠাকুর)

শুভ্রস্নাত শীতের শুভেচ্ছা সবাইকে......:)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন