শাহ আব্দুল করিম মরমি ধারার আধুনিক কবিদের অন্যতম। ১৯১৬সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী, বাংলা ১৩২২সন এর ফাল্গুন মাসের প্রথম মঙ্গলবার, বর্তমান সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধল আশ্রম নামক গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর জন্ম তারিখ সম্পর্কে তাঁর বক্তবঃ
“তেরশো বাইশ বাংলায় জন্ম আমার
মা বলেছেন ফাল্গুন মাসের প্রথম মঙ্গলবার”
তাঁর পিতার নাম ছিলো ইব্রাহীম আলী এবং মাতার নাম ছিলো নাইওরজান বিবি। পিতা-মাতার ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি এক মাত্র পুত্র আর বাকি সবাই ছিলো বোন। তাঁর জন্মের সময় তাঁর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিলো না।
মরমি ধারার অন্যতম কবি শাহ আব্দুল করিম সাত দশেকের বেশি সময় ধরে সঙ্গীতচর্চা করতেন। প্রাক্রেতিক সন্দরজ, বৈচিত্র্য তাঁর গানে ব্যাপকভাবে এসেছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা নতুনমাত্রা পেয়েছে তাঁর রচনায়। ভাটি অঞ্চলের সামাজিক ও সাস্ক্রিতিক ইতিহাস যেমনি ভাবে উঠে এসেছে তাঁর গানের বাণীতে, তেমনি প্রতিফলিত হয়েছে সাধারণ মানুষের বধ,ভাবনাও মানসিকতা। তাঁর রচনা সম্ভারে অসাম্প্রদায়িকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
হাওরের তরঙ্গ ও জলমগ্ন প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা শাহ আব্দুল করিমের প্রথম গানের বই ‘আফতাব সঙ্গীত’ ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে সঙ্গীত সাধনার ফসল হিসেবে তিনি অনুরাগিদের উপহার দেন ‘গণসংগীত’, ‘কালনীর ঢেউ’, ‘ধল মেলা’, ‘ভাটির গান’, ‘কালনীর কূলে’, এবং সর্বশেষ রচনা সমগ্র। শাহ আব্দুল করিমকে প্রকৃতি যেভাবে উদার হস্তে দান করেছে শব্দের ভাণ্ডার, তিনিও সেভাবে প্রকৃতির সভা-সম্পদকে গানের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন মানুষের কাছে।
শাহ আব্দুল করিম ২০০৯ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁকে আমরা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি। তিনি ছিলেন সকলের প্রেনার উৎস। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী। তাঁর সাধনার মূল বিষয় ছিলো মানবতাবাদ। তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন উপমহাদেশের হিন্দু-মুসলমানের সংঘাত। তাই তিনি দুটি সম্প্রদায়ের লোকজনকে পরস্পরের কাছাকাছি আনতে ছেয়েছিলেন। তিনি অনেকটা কৃতকারয ও হয়েছেন। তাঁর প্রতিটি গান মানুষের হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে কারণ তাঁর গান তাঁর মনের কথা নয়, তাঁর আত্মার কথা। তাই তিনি চিরকাল মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন।
http://www.youtube.com/watch?v= m63osNn14T4 '
http://www.youtube.com/watch?v= m63osNn14T4 '
আগে কি সুন্দর দিন কাতাইতাম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন