সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১২

বসন্ত বাতাসে সই গো......!



এখনো ফাল্গুন মাস,বসন্তকাল। তাও প্রায় শেষের দিকে! নিয়ম অনুযায়ী গাছে নতুন পাতা গজানো এবং ফুলে ফুলে ভরে উঠার কথা চারপাশ। কিন্তু এখনো পাতা ঝরছে। বৈষ্ণিক উষ্ণতায় কালের নিয়মে তারতম্য দেখা যায়। সময় মত ফুল ফোটে না, সময় মত পাতা ঝরে না, সময় মত বৃষ্টি পড়ে না। সবকিছুতেই কেমন অনিয়মের ছোঁয়া। তারপরেও, নবযৌবনের প্রতীক এই বসন্ত। বসন্ত মানেই সুন্দর, বসন্ত মানেই নতুনের জয়গান।

গাছে গাছে কচি কিশলয় জেগে ওঠার আভাসে, পত্র-পল্লবের মর্মর আর পাতার আড়ালে কোকিলের কুহুতান জানান দিচ্ছে,‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে...
কচি পাতায় আলোর নাচন, হৃদয়ের উচাটন আর ফুল ফোটার পুলকিত দিন বসন্ত। ফুল ফুটবার পুলকিত এই দিনে বন-বনান্তে কাননে কাননে পারিজাতের রঙের কোলাহলে ভরে ওঠে চারদিক। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতই বাঙালির মনে লাগে দোলা। পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, আবার ব্যাকুল করে তোলে অনেক বিরোহী অন্তর। প্রেমিকার বিরহ বেদনার মর্মস্পর্শী চিত্রকল্প কবির কাব্যভাবনায় নানাভাবে মূর্ত হয়েছে- এমনি দিনে প্রিয়তম যদি ঘরে ফিরে না আসে, তাহলে কি ভাবব ভালোবাসার দেবতা নেই, না বসন্ত নেই! এখানে ভালোবাসার দেবতাই বসন্ত। হাজার বছরের বাঙালি জীবনে এই ভালোবাসার দেবতা ও বসন্তের প্রভাব অনিবার্য, অলঙ্ঘনীয়।

শীতে খোলসে ঢুকে থাকা বনবনানী যেন এখন অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠছে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগছে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতিতে চলছে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব। আর এ সাজে মন রাঙিয়ে গুন গুন করে অনেকেই গেয়ে চলছে-
বসন্ত বাতাসে সই গো,বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে....! 

শীতের রিক্ততা মুছে দিয়ে প্রকৃতি জুড়ে জেগেছে আশ্চর্য শিহরণ। হিমেল পরশে বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠছে নব জীবনের ঊর্মি। নব পুষ্প পত্র-পল্লবে, প্রকৃতিতে সাজ সাজ রব। নীল আকাশে সোনা ঝরা আলোকের মতই হূদয় আলোড়িত-আহা! কি আনন্দ আকাশে বাতাসে..! তবে বাস্তবতার পাথর চাপা হৃদয়ে সবুজ বিবর্ণ হওয়া চোখে প্রকৃতি দেখার সুযোগ পান না নগরবাসী। চারপাশে নদ-নদী, গাছপালা খোলা আকাশের বদলে ইট, সিমেন্ট ও কংক্রিটের অরণ্যতবে,গাছপালা একেবারে যে নেই তা নয়! তারপরেও মানুষ মিশে আছে প্রকৃতির সাথে। এমনিভাবেই বসন্ত মানুষের মনে জাগাবে নির্মল আনন্দ। 


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ হাসান রাজা। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন