বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

প্রাণের উৎসবঃ বই মেলার দিনলিপি-৭


একুশ পার হলেও বইমেলায় বাঙ্গালির জোয়ার এখনো শেষ হয়নি। কারণ, একুশের চেতনা বাঙ্গালির অন্তরে সব সময় বিরাজমান। এ যেনো বাঙ্গালির অস্তিত্বে মিশে গেছে। শেষ মুহূর্তে এসেও বই মেলা জমে উঠছে আরও ভালোভাবে। ধাক্কা ঠেলা দিয়ে স্টলের সামনে জায়গা করে নিচ্ছেন এবং নিজেদের পছন্দমত বই কিনছেন বই প্রেমীরা। তবে, বই মেলায় ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাটাই একটু বেশী।


সেদিন এক আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খেয়ে তারপর বই মেলায় আসলাম। যদিও দাওয়াত খাওয়া এবং বই মেলায় আসা তার পুরোটাই রশিদ ভাইয়ের জন্য। সেদিন বই মেলায় ভিড় ততটা খারাপ ছিলো না। বহুরূপী কবি কুহক ভাইকে ফোন দিয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম। লিটলম্যাগ চত্বরে ভালোই জমিয়েছেন বহুরূপী কবি কুহক, কবি রেজওয়ান তানিম, কবি সরসিজ আলীম, কবি চারুমান্নান, কবি বাবুল হোসাইন ভাই। সব কবিদের ভিড়ে প্রায় চাপা পড়ে যাচ্ছিলাম আমি আর রশিদ ভাই। এর মধ্যে আবার হাসির রাজার সাথে দেখা হয়ে গেলো। তিনিও আমাদের সাথে যোগ দিলেন। সবাই কতক্ষণ বক বক করলো। হাসির রাজা বলল চা খাবে, তার নাকি খুব পিপাসা পাইছে। তখন কি আর করা রাজার সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে গেলাম চা খাইতে। সবাই শুধু ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে চা গিলছে আর আমি মুখেও দিতে পারছি না। যদিও আমি নরমালি চা একটু আস্তে আস্তেই পান করি। তারপর রাজা তার সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে বিদায় হলেন। ওনার রাজ্যের নাকি কি জরুরী কাজ আছে, তাই তাকে বিদায় না দিয়ে পারলাম না।

আবার গিয়ে হাজির হলাম লিটলম্যাগ চত্বরে। এরই মধ্যে রশিদ ভাইকে ফোন দিলেন সদ্য পাকনি বুড়ি জান্নাতি আপা। সাথে ছিলেন তারই আপন ছোট বোন, নামটা ঠিক মনে নেই। তিনি তার রশিদ ভাইয়াআআ’র জন্য একটা গিফটু আনলেন। রশিদ ভাইয়ের সাথে কথা ছিলো তিনি আমার ঠিক পরিচয় দিবে না। কিন্তু তিনি আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। সবার সাথে একে একে পরিচয় হলেন বুড়ি আপা। এরই মধ্যে তেনারা আবার চা খেলেন। মাঝে মাঝে বুড়ি আপা আমাকে সাল্কা সাল্কা জ্ঞান বিতরণ করছিলেন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতে নেই আরও হাবিজাবি। কিছুক্ষণ পরে নতুন করে পরিচয় হলাম বুড়ি আপার ভাবীর সাথে। সালাম আর কুশল জিজ্ঞাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলাম। আমাকেও ছোট্ট একটা গিফটু দিলেন বুড়ি আপা। অনেকক্ষন গপ্পসপ্প সেরে বিদায় নিলেন বুড়ি আপা।

এরপর আমি আর রশিদ ভাই গেলাম বই কিনতে। সাহিত্য প্রকাশনী থেকে রশিদ ভাই কিছু বই কিনে বাংলা একাডেমীর লাইব্রেরীর দিকে গেলাম। সেখানে ৫০%, ৩০% এ বই বিক্রি হচ্ছে। যদিও সব আদিকালের বই। এগুলোর ফাঁকে ফাঁকে কিছু ভালো বই আছে। রশিদ ভাই কয়েকটা বই কিনলেন এবং আমাকেও একটা কিনে দিলেন। বাংলা একাডেমীর আরেকটা লাইব্রেরীতে গেলাম। সেখানে একটু দেখে আবার লিটলম্যাগ চত্বরের দিকে গেলাম। সবাই আবার হাল্কা কথাবার্তা বলে বিদায় নিলাম। পথি মধ্যে দেখা হল ভালোবাসার দেয়াল ‘জাকির ভাইয়ের’ সাথে। এরপর কুহক ভাইয়ের মিসেস মানে আমার ভাবীর আর তাদের এক পুত্র সন্তানের সাথে সাথে দেখা হল। কুহক ভাইয়ের জিপে আমরা সবাই যাচ্ছিলাম। ভাবীর সাথে কিছু কথার মাধ্যমে হাল্কা স্মৃতিচারন করলাম কিছু মুহূর্ত। পথি মধ্যে আমাকে আর রশিদ  ভাই নেমে গেলাম। রশিদ ভাই তাঁর লিখা কিছু বই প্রদানের মাধ্যমে আমাকে বিদায় দিলেন। এভাবেই শেষ হয়ে গেলো বই মেলার আরেকটা দিন।

আজকে কোন বই সম্পর্কে লিখতে পারলাম না। কারণ, কোন বই পড়া হয়নি।
সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন সব্বাই। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন